26 Apr Waqfe Jadid
শিশুদের মাঝে ওয়াকফে জাদীদের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করুন
হুযূর আনোয়ার (আই.) ৪ঠা জানুয়ারি, ২০০৮ সনে তাঁর প্রদত্ত জুমুআর খুতবায় সংক্ষেপে বলেন:
“হযরত খলীফাতুল মসীহ সালেস (রাহে.) বিশেষভাবে শিশুদের মাঝে ওয়াকফে জাদীদের বিষয়টি তুলে ধরেছেন, এবং এই স্কিমের বরকতে পাকিস্তানের আদায়কৃত মোট চাঁদার অর্ধেক পরিমাণ চাঁদা শিশুরা দিয়ে থাকে। এটি সবচেয়ে বেশি প্রশান্তিদায়ক যে আমাদের জামাতে এরূপ মূল্যবোধ সম্পন্ন শিশুরা রয়েছে; যারা প্রকৃতপক্ষেই আগত প্রজন্মে এই কল্যাণের ধারাকে অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবধ্য। হুযূর আনোয়ার (আই.) সমগ্র বিশ্বের পিতামাতাদের এই বিষয়ের ওপর সজাগ দৃষ্টি দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি ওয়াকফে জাদীদ সেক্রেটারিদের, নাসিরাত ও আতফাল সেক্রেটারিদের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে বলেন। ওয়াকফে জাদীদ এর কল্যাণ-এর বিষয়ে শিশুদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
বর্তমান বস্তুবাদী বিশ্বে এই সচেতনতায় বড় হয়ে ওঠা শিশুরা কেবল জামাতের জন্যই সম্পদ হয়ে উঠবে না বরং তাদের ব্যক্তিগত জীবনেও তারা এর কারণে আল্লাহ কর্তৃক পুরস্কৃত হবে।”
ওয়াকফে জাদীদের শিশু মুজাহিদ
- অনুগ্রহ করে সকল শিশুকে (১৫ বছরের কম বয়সী) ওয়াকফে জাদীদের কল্যাণময় স্কিমে তাদের নিজ থেকে ৫০ ডলার (বাংলাদেশে সর্বশেষ ৩০০টাকা) কিংবা তার বেশী প্রদান করে শিশু মুজাহিদ হবার জন্য অনুপ্রানিত করুন।
- এই অর্থ হতে পারে তাদের নিজেদের আয় করা কিংবা তাদের বাবা মায়ের কাছ থেকে পাওয়া, যা তারা তাদের গৃহস্থালি বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে অর্জন করে থাকে
- আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল এই যে, ইউএসএ-এর ওয়াকফে জাদীদের মোট আদায়ের অর্ধেক অংশে ইউএসএ এর শিশুদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের চাঁদা প্রদান নিশ্চিত করা, ইনশাআল্লাহ।
সাত বছরের কম বয়সী ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে
একজন অনূর্ধ্ব-৭ বছরের বাচ্চাকে শিশু মুজাহিদ হিসাবে গণ্য করার জন্য ওই শিশুটির পক্ষ থেকে তার মাকে এ ব্যাপারে অঙ্গীকার করতে হবে।
তিনি মূলত নিম্নলিখিত কাজ করার অঙ্গীকার করবেন:
- তার সন্তানদের মধ্যে দান করার অভ্যাস গড়ে তুলবেন
- বাচ্চাদেরকে বাড়ির আশেপাশে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ দিন এবং তারপরে তাদের উপার্জিত অর্থ শিশু মুজাহিদের ‘মানি ব্যাংক’-এ রাখার পরামর্শ দিন।
- তিনি বাচ্চাদের জন্য ‘মানি ব্যাঙ্ক’ (পিগি ব্যাঙ্ক) কিনে দিতে পারেন।
- চাঁদা সংগ্রহের সময় বাচ্চাদের তাদের নিজ হাতে অর্থ প্রদান করাটাই যথোপযুক্ত হবে।
স্বীকৃতি
- যেসব নাসিরাত অঙ্গীকার করবেন এবং কমপক্ষে ৫০ ডলার প্রদান করবেন তাদের নাম হুযূর আনোয়ার (আই.) এর কাছে বিশেষভাবে দোয়ার জন্য পাঠানো হবে।
- ৭ বছরের কম বয়সী যেসব শিশু (ছেলে এবং মেয়ে) অঙ্গীকার করবে এবং কমপক্ষে ৫০ ডলার প্রদান করবে তাদের নাম হুযূর আনোয়ার (আই.) এর কাছে বিশেষভাবে দোয়ার জন্য পাঠানো হবে।
- নাসিরাতদের ও শিশু মুজাহিদ স্কিমে অংশগ্রহণকারী শিশুদের পরবর্তী বছরের স্থানীয় ইজতেমায় সার্টিফিকেট দেওয়া যেতে পারে। এই বিষয়ের উপর জোর তাগিদ দিতে হবে যে, এই সাফল্যের প্রকৃত কল্যান আল্লাহতা’লার কাছ থেকেই আসে।
কিছু ধারণা
- তাদেরকে নিজেদের বাড়ির চারপাশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে উৎসাহিত করা যেতে পারে।
- স্ন্যাকস এবং/ হস্তশিল্প তৈরি করে স্থানীয় মসজিদে বিক্রি করা যেতে পারে
- হুযূর আনোয়ার (আই.) পরামর্শ দিয়েছেন যে, বাচ্চাদের উচিত ফাস্ট ফুডের পিছনে অর্থ ব্যয় করার পরিবর্তে সেই অর্থ জমানো, যাতে তারা ওয়াকফে জাদীদে আরও বেশি পরিমাণে চাঁদা দিতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
একজন লাজনা এই মর্মে প্রশ্ন করেন যে, তিনি কি ৫০ ডলার এর দুটি ওয়াদা করতে পারেন কিনা এবং তার অনাগত নাতি-নাতনিদের জন্য হুযূর আনোয়ার (আই.) এর কাছে দোয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন কিনা। তিনি তার মেয়ের সন্তান-প্রাপ্তির জন্য দোয়া করছেন, যে কিনা প্রায় ৫ বছর যাবৎ বিবাহিত। উত্তরটি হল “হ্যাঁ”। কিছুকাল যাবত এই ধারা অব্যাহত আছে এবং হযরত খলীফাতুল মসীহ সালেস (রাহে.) এই বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন। সুতরাং, অনাগত বা প্রত্যাশিত শিশু মুজাহিদের জন্যও চাঁদা প্রদান করা যেতে পারে। প্রদানকৃত চাঁদার রশীদ পিতামাতা বা দাদা-দাদি, নানা-নানী, অর্থাৎ প্রদানকারীর নামে তৈরি হবে, এবং সেখানে এটি উল্লেখ করা থাকবে যে, “সন্তানের পক্ষ থেকে, যখন আল্লাহতা’লা তা দান করবেন।”